অধুনা বাংলাদেশের ঢাকা, বিক্রমপুরের মুখার্জীবাড়ির নীলপূজা পাঁচশতাধিক বৎসরের প্রাচীন। দেশবিভাগের আগে যদিও দেশবিভাগকে কেন্দ্র করেই বর্তমান ভারতবর্ষের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশপরগনা জেলার শ্যামনগরে আগমন। প্রথমে জগদ্দলে কিছুদিন কাটিয়ে মূলতঃ পীরতলায় এবং পরে শীতলাগড়ে 1998 খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত অবস্থানের পর বর্তমানে হুগলী জেলার পাণ্ডুয়ায় বিবেকানন্দনগর স্থানে মন্দিরে বিগ্রহ স্থাপিত। বিগ্রহ আদি এবং সুপ্রাচীন। শিবলিঙ্গ, কষ্টিপাথরের মনসা, গোপাল, বংশানুক্রমে পূজিত দামোদর (নারায়ণ শীলা) নীলপূজার স্বর্ণ নির্মিত ত্রিনয়ন যুক্ত পাট, মহাদেবের এক অপ্রচলিত অতিদুর্লভ মূর্তি অধিষ্ঠিত এবং প্রত্যহ পঞ্চপচারে পূজিত।শ্যামনগরে অতি দুঃসময়ে, 1985 সালে অষ্টধাতু নির্মিত সুপ্রাচীন শিবলিঙ্গ এবং গোপাল মূর্তি চুরি হওয়ার পর পাথরের শিবলিঙ্গ প্রতিষ্ঠা করা হয়।বর্ধমানের রাজা বর্গী আক্রমণকালে গড় শ্যামনগরে দুর্গ নির্মাণ করেছিলেন যা এখন কেবল স্মৃতি (হরপ্রসাদ শাস্ত্রী, রচনাবলী)। শীতলাবাড়ির ঝিল নামে খ্যাত ঝিলটি ঘিরে আছে উঁচু মাটির প্রাচীন গড়টিকে যা এখন মাটির ঢিবির মতই। এই মাটির ঢিবি খুঁড়ে তৎকালীন পূর্ববঙ্গীয় উদ্বাস্তুরা বহু মূল্যবান ঐতিহাসিক জিনিসপত্র উদ্ধার করে বিক্রি করে নষ্ট করেন। সেই রকমই জনৈক ব্যক্তি এক পিতলের গোপাল মূর্তি পেয়েছিলেন যার কানে হীরক খচিত স্বর্ণ কুন্তল, চোখে নীলকান্ত মণি। তিনি কুন্তল ও চোখের নীলা বিক্রি করে দেন। পরবর্তীতে প্রায় ধ্বংস পরিবার তাকে অনুশোচনায় ব্যথিত ও পাগলপ্রায় করে তোলে। জনৈকা বিধবা ব্রাহ্মণী, যিনি তার ছেলে মদনের নামে 'মদনের মা' হিসেবেই পরিচিত ছিলেন, তিনি প্রতিদিন ফুল তোলা, মন্দিরের মাটির মেঝে নিকোনো ইত্যাদি সেবা করতেন। তিনি সেই গোপাল মূর্তিটি পুন:স্থাপনার অনুরোধ করেন। বর্তমানে সেই গোপাল মূর্তিই পূজিত হন। গোপালের হীরক খচিত স্বর্ণ কুন্তল নির্মাণ করিয়ে দেন জনৈক ভক্ত শ্রী সুধাংশু দাস মহাশয়। গোপালের চোখের ক্ষতটি প্রতিষ্ঠাকালে চন্দন অনুলেপন দ্বারা পূর্ণ করেন তদানীন্তন ধর্মাধিকারিক শ্রী সুনীল কৃষ্ণ মুখার্জী মহাশয়।দামোদরের নাভি দেশের ছিদ্রের অভ্যন্তরে উপরে ও নীচে সুস্পষ্ট সুদশর্ন চক্র বিদ্যমান।কথিত আছে যে সুবৃহৎ এক সাপ কষ্টিপাথরের মনসা মূর্তিটি বাংলাদেশের বিক্রমপুরের মন্দিরের উত্তর দিকের পুকুর সাঁতরে পার হয়ে মন্দিরে রেখে উধাও হয়। পুকুরটিও সুবৃহৎ, সাপটিও সহজেই সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। বহুলোক জমা হয় এই ঘটনা চাক্ষুষ করার জন্য।গ্রামের এই সকল জনগনের অনুরোধে এবং ইচ্ছায় মনসা মূর্তিটি বিগ্রহের সাথে প্রতিষ্ঠা করা হয়। এর পূর্বে মনসার কোনও পূজা এখানে হত না।মহাদেবের মূর্তির কাঁধ থেকেও দুটি সাপ ফনা বিস্তার করেছে। সাদা পাথরের মূর্তিটির মুখভঙ্গী বিভিন্ন সময়ে পরিবর্তিত হয় বলে বিশ্বাস।
User Name: Passkey :
Forget Passkey Change Passkey
মন্তব্য, বিতর্ক ও আলোচনায় অংশ নিতে লগ ইন বা সাইন আপ করুন Login/Sign Up to Remarks or to take part in Discussion/Debate.
Remarks/মন্তব্য Discussion/আলোচনা Debate/বিতর্ক
Please type either Username or your email ID here.
Please type Username here.
Please type old Password here.
Please type New Password here.